ADAMDIGHI UPAZILA Adamdighi Aslamia Dorbe Sorif.Bogra
বাবা আদম(রঃ)কে ঘিরেই
বাবা আদম(রঃ)কে ঘিরেই
আদমদীঘি নাম করণ
১৩শ শতাব্দীর পূর্বে আদমদীঘি নামের কোন শহরের অস্তিত্ব ছিল না,সে সময় বঙ্গ দেশের এই
অঞ্চল শাসন করতেন রাজা দ্বীতিয় বল্লাল সেন। তার রাজধানী ছিল ঢাকার বিক্রমপুর। রাজার
শাসন আমলে নিন্ম বর্ণের হিন্দু মুসলিম ও খৃষ্টানেরা নির্যাতিত হত। ঐ সময় আরাকান
রাজ্য থেকে বাবা আদম(রঃ) ১২ জন শিষ্য নিয়ে এই এলাকায় এসে আদমদীঘিতে আস্তানা গড়ে
তোলেন। তার শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শাহ তুরকান,শির মোকাম,শাহ
বন্দেগী,শাহজালাল,শাহ ফরমান ও শাহ আরেফিন। বাবা আদম(রঃ)এবং তার শিষ্যদের সুন্দর
আচরনে অল্পদিনের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সে সময়ে হিন্দু প্রধান এলাকার দলে দলে
লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে থাকে। এক পর্যায়ে বগুড়া জেলার শেরপুর হয়ে যমুনা নদী
পর্যন্ত বাবা আদম(রঃ)এর প্রভাব সৃষ্ঠি হয়। এ সময় আদমদীঘির জনসাধারন খাবার পানির
তীব্র সংকটে ভুগছিলেন। বাবা আদম(রঃ)এর ডাকে হাজার হাজার হিন্দু মুসলিম এসে আদমদীঘি
থানার পার্শ্বে একটি বিশাল আকারে দীঘি খনন করেন। এবং ঐ দীঘির পানি দ্বারা এলাকার জল
কষ্ট নিবারণ হয়। সে সময় এলাকাবাসী বাবা আদম(রঃ) এর শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরুপ
জায়গাটির নাম করণ করেন আদমদীঘি। সে থেকে দেশের মানচিত্রে আদমদীঘি উঠে আসে। রাজা
বল্লাল সেন মুসলিমদের উত্থান সস্মন্ধে অবগত হয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। খোঁজ নিয়ে তিনি
জানতে পারেন বাবা আদম(রঃ)এর অপ্রতি রোধ্য মতা। অপর দিকে রাজা বল্লাল সেনের প্রজা
নীপিড়নের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সংবাদ পেয়ে বাবা আদম(রঃ) এক বিশাল বাহিনী নিয়ে
যমুনা নদী উপক্রম করে বিক্রম পুরের অদূরে অবস্থান নেয়। এ সংবাদ পেয়ে রাজা বল্লাল
সেন তার পরিষদ বর্গকে নিয়ে প্রাসাদ মন্দিরে জরুরী বৈঠক বসে। কথিত আছে বৈঠকের সময়
একটি চিল উড়ে এসে এক টুকরো গো-মাংস ঐ মন্দিরের সামনে ফেলে দেয়। এতে রাজা বল্লাল সেন
প্তি হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন। শুরু হয় যুদ্ধ। উভয় পরে যুদ্ধের এক
পর্যায়ে রাজা বল্লাল সেন সংবাদ বাহকের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তার সৈন্যরা মুসলিম
বাহিনীর সাথে কুলাতে পারছে না। প্তি রাজা তলোয়ার হাতে নিয়ে নিজে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য
প্রাসাদে অবস্থিত সৈন্যদের নিয়ে যুদ্ধ েেত্র রওনা দেওয়ার আগে একটি অগ্নি কুন্ড
জ্বালিয়ে দিয়ে পরিবারের মহিলাদের ডেকে তিনি বলেন,আমার পোষা দুটি কবুতর নিয়ে যুদ্ধে
যাচ্ছি। যদি আমি পরাজিত হই তবে আমার পোষা দুটি কবুতর উড়ে এসে প্রাসাদে পড়বে। তখন
তোমরা মুসলিমদের ছোয়া থেকে বাঁচতে জলন্ত অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ বিসর্জন
দিবে।
তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। এক সময় কৌশল গত কারনে মুসলিম বাহিনীরা পিছু হটে যায়। যুদ্ধ
থেমে যায়। কান্ত পরিশ্রান্ত বল্লাল সেন একটি জলাশয়ে গোসল করতে নামে। এই ফাকে পোষা
দুটি কবুতর উড়ে চলে যায়। গোষল শেষে তার কবুতর দুটি না দেখতে পেয়ে আঁৎকে উঠেন এবং
দ্রুত রাজা ঘোড়ায় চড়ে প্রাসাদে ছোটেন। কিন্তু প্রাসাদে ফিরে গিয়ে দেখলেন তার কোন
আপন জন বেঁচে নেই। সবাই প্রাসাদের চুড়ায় পোষা দুটি কবুতর দেখে রাজার পরাজয় অথবা
মৃত্যুর কথা ভেবে অগ্নিকুন্ডে প্রাণ বিসর্জন দেন। হত বিহবল রাজা বল্লাল সেন শোক
সইতে
না পেরে নিজেও অগ্নিকুন্ডে ঝাপিয়ে পড়ে প্রাণ বিসর্জন দেন। এদিকে বাবা আদম(রঃ)যুদ্ধ
বন্ধ দেখে অজুকরে নামায আদায় করা কালে শত্র“ সৈন্যের আক্রমনে আহত হয়। সে সময় তার
নির্দেশে তাকে দ্রুত আদমদীঘিতে নিয়ে আসা হয় এবং কিছূ সময়ের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।
তার অছিয়ত মতে তাকে খননকৃত দীঘির দনি পাড়ে কবর দেওয়া হয়। তার মাজারকে ল করে একটি
মসজিদ,মাদ্রাসা,হাফেজিয়া মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর এখানে ওরশ মোবারক হয়। এখনও
অসংখ্য হিন্দু মুসলিম তার মাজারের পার্শ্বে দিয়ে যেতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মূলতঃ
বগুড়ার আদমদীঘি বাবা আদম(রঃ) এর মাজার সংলগ্ন আদমদীঘির মধ্যে বৃহত্তম মসজিদ,মাজারের
উত্তর ও দনি পার্শ্বে বুহত্তম ২টি দীঘি,পশ্চিম পার্শ্বে থানা,পূর্ব পার্শ্বে
আদমদীঘি